শিরোনাম

মা ও দুই শিশুসহ ৪ জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ দিন আগে
ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের কাছে দুই শিশুসহ চারজনের মরদেহ হস্তান্তর করেছে। হামাসের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তারা নিহত হয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স ও আল জাজিরা।

নিহত দুই শিশুর নাম কেফির বিবাস ও অ্যারিয়েল বিবাস (৪)। তাদের মা শিরি বিবাস এবং চতুর্থ জিম্মির নাম ওদেদ লিফশিৎজ।

কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত মাসে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় জিম্মি বিনিময়ের কার্যক্রম চলছে। এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি বহু ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের কিবুতজ নির ওজ এলাকা থেকে বিবাস পরিবারের সদস্যরা হামাসের হাতে জিম্মি হন। তখন কেফিরের বয়স ছিল মাত্র নয় মাস। হামাসের হাতে তার বাবা ইয়ারদেন বিবাসও আটক হন।

হামাস গত বছরের নভেম্বরে জানায়, ইসরায়েলের বিমান হামলায় মা ও দুই শিশু নিহত হয়েছে। তবে ইসরায়েল সে সময় এই তথ্য নিশ্চিত করেনি।

রেড ক্রসের তথ্যমতে, হামাস এখন পর্যন্ত ১৯ জন জীবিত জিম্মির বিনিময়ে ১,১৩৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। আজ চারজনের মরদেহ ফেরত দেওয়ার ফলে হামাস মোট ২৩ জনকে ফেরত পাঠাল।

এদিকে, চলতি মাসে যুদ্ধবিরতির আওতায় হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছেন ইয়ারদেন বিবাস। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই সন্তান ও স্ত্রীর ভাগ্য সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা শেষ হবে না।

এবারই প্রথমবারের মতো গাজা থেকে ইসরায়েলে কোনো মৃত জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য, ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়, বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেয়।

এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ছাড়তে হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা বাড়ি ফেরার অনুমতি পাবে। একই সময়ে প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী লরিকে গাজায় প্রবেশের সুযোগ দেবে ইসরায়েল।

চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে ইসরায়েলি সেনাদের। তৃতীয় ও শেষ ধাপে গাজার পুনর্গঠন শুরু হবে, যা সম্পন্ন হতে কয়েক বছর লাগতে পারে।

চুক্তির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী কাতার জানিয়েছে, প্রথম ধাপে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে নারী, শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ও আহত বেসামরিকরা রয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল হামাসকে দমন করতে সামরিক অভিযান শুরু করে।

টানা ১৫ মাসের এই যুদ্ধ গাজায় প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। যুদ্ধের ফলে উপত্যকাটির অবকাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে, আর ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।