ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে অবরুদ্ধ এই অঞ্চলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫০ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের টানা আগ্রাসনে মোট ৫০ হাজার ৩৯৯ জন নিহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আহত ১৮৩ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর ফলে এই সংঘাত শুরুর পর থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৩ জনে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
প্রায় ১৫ মাসের সামরিক অভিযান চালানোর পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর প্রায় দুই মাস শান্তি বজায় থাকলেও, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আবারও ইসরায়েল হামলা শুরু করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১ হাজার ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২ হাজার ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইসরায়েলের এই হামলার মাধ্যমে ভঙ্গ হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, আর ভূখণ্ডটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এ ছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা চলছে।