শিরোনাম

ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড়

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৫ দিন আগে
ছবি : সংগৃহীত

ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও স্পেনসহ বিভিন্ন দেশ তার বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে, যা ফিলিস্তিনিদের স্বাধিকার ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে বড় বাধা বলে অভিহিত করা হয়েছে।

সম্প্রতি ইসরাইলি বাহিনীর হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই গাজা নিয়ে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে অঞ্চলটি পুনর্গঠনের কথা জানান, যা বিশ্বব্যাপী বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেন, ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার দিতে হবে। একইভাবে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি গাজার পরিস্থিতিকে সংকটপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, ফিলিস্তিনিদের সেখানে নিরাপদে বসবাস ও উন্নয়নের সুযোগ পাওয়া উচিত।

ফ্রান্সও ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এটিকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও ফিলিস্তিনিদের বৈধ অধিকার ক্ষুণ্ণ করার পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস বলেন, গাজা ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রেরই অংশ এবং তা ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকতে হবে।

এছাড়া চীন, রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কও ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সব পক্ষকে সংঘাত নিরসনে কাজ করতে হবে এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথেই ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও মধ্যপ্রাচ্য সংকটের সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক নীতির ওপর জোর দিয়েছেন।

ট্রাম্পের বক্তব্যের সমালোচনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও সরব হয়েছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে একে বেআইনি ও ভয়ংকর উল্লেখ করে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

হামাস নেতা ইজ্জাত এল-রেশিক ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, গাজা কোনো সাধারণ ভূখণ্ড নয়, এটি কেনাবেচার সম্পত্তিও নয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানকে ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘন ও ইসরাইলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রমাণ হিসেবে দেখছেন।

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দাবি করেছেন, ট্রাম্প আসলে গাজার ধ্বংসস্তূপ সরানোর কথা বলেছেন এবং এজন্যই সেখানে বসবাসরত মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজায় মার্কিন সেনা মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই।