গাজাবাসীদের স্থানান্তর ও ফিলিস্তিনি উপত্যকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংক্রান্ত ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নিধনের শামিল’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক ফারনাজ ফাসিহির এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া জানান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, “গাজার জনসংখ্যা স্থানান্তর এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উন্নয়নের নামে নেওয়া ট্রাম্পের পরিকল্পনা আসলে জাতিগত নিধনের মতো হবে।”
নিউ ইয়র্ক টাইমসের জাতিসংঘ ব্যুরো প্রধান ফারনাজ ফাসিহি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছেন, গুতেরেস আরও বলেছেন, “ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা স্থায়ীভাবে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নস্যাৎ করতে পারে।”
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা নিয়ন্ত্রণে নেবে এবং অঞ্চলটি পুনর্গঠন করবে। তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজাকে পুনর্নির্মাণ করে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো হবে, যার মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান ও আবাসন সৃষ্টি হবে।
ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র গাজা নিয়ন্ত্রণে নেবে এবং সেখানে আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। আমরা সব বিপজ্জনক অস্ত্র ধ্বংস করব, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলো অপসারণ করব এবং এলাকাটি সমতল করা হবে। এরপর আমরা সেখানে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলব, যা ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।”
তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, এই কর্মসংস্থান আসলে কার জন্য হবে, কারণ একইসঙ্গে তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ারও পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমি কোনো নাটকীয় বক্তব্য দিতে চাই না বা হাস্যকর কিছু বলতে চাই না।” এরপর তিনি গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানানোর পরিকল্পনার কথা জানান এবং বলেন, “এটি অপূর্ব হতে পারে।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলমান গাজা যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই শান্তি আনবে, যা “রক্তপাত ও সহিংসতা চিরতরে বন্ধ করবে।”