ভারতে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ ‘ধর্মীয় জনসংখ্যা’র ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সময় ও ফলাফল নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ভারতে হিন্দু জনসংখ্যা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে ও মুসলিম জনসংখ্যা ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।
যদিও এই পরিসংখ্যান বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে-
শতকরা হারে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ ও হিন্দু জনসংখ্যা কমার হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
৬৫ বছরে এ পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য নয়। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এটা নিশ্চিত হওয়া যায়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর এই পরিসংখ্যান কেন সংসদ সদস্য গিরিরাজ সিং ও আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমের মতো বিজেপি নেতারা পুঁজি করছে জানেন?
আসলে হিন্দুদের বিপদে পড়ার আশঙ্কার দাবি পুনরাবৃত্তি যেন করা যায়, এই কারণে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই পরিসংখ্যানের ঢোল পেটাচ্ছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ অন্যদের চেয়ে বেশি সন্তান নেওয়ার অভিযোগ তুলেন।
যদিও নির্বাচনী প্রচারের সময় কেন এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো, এর কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ।
তবে দুর্বল একটি মন্তব্য করেছেন বিজেপি কাউন্সিল সদস্য ড. শামিকা রবি।
শামিকা রবি জানান, এ প্রতিবেদনের ফলাফলগুলো বিতর্কিত করা উচিত নয়। কারণ এতে শুধু দেখানো হয়েছে- ভারত একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে সংখ্যালঘুরা ভালো করছে।
আপাতদৃষ্টিতে এই বক্তব্য যতটা প্রকাশ করে তার চেয়ে বেশি লুকিয়ে রাখে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- যেহেতু ভারতের সংখ্যালঘুরা অধিকাংশই নাগরিক, নতুন অভিবাসী নয় তাই বলা যায়-
মোদি প্রশাসন রোহিঙ্গা বা আফগানদের মতো মুসলিমদের অভিবাসনের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করেছে।
পরিশেষে বলতে হয়- আদমশুমারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই পরিসংখ্যান সত্য বলে মেনে নিতে পারি না।
হয়তো ভারতীয় নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক অপব্যবহারের বিষয়টি দেখবে।
বিজেপির এই পরিসংখ্যান শুধু বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন বলা যেতে পারে। এটি যতটা প্রকাশ করেছে, তার চেয়ে বেশি গোপন করেছে।
No tags found for this post.