আজ মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা ভাসানী ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে দাফন করা হয়। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সন্তোষে তার পরিবার, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, তার মুরিদান, ভক্ত, রাজনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে।
“মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন অধিকারবঞ্চিত, অবহেলিত এবং মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থরক্ষার অগ্রসেনানী। তিনি জাতীয় সংকটে জনগণের পাশে থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দেশ ও জনগণের জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। ভাসানী সবসময় জাতীয় স্বার্থকে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে রেখেছেন। ক্ষমতার কাছে থাকলেও তিনি কখনো ক্ষমতার মোহে আবিষ্ট হননি। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাদাসিধে এবং নির্মোহ। তার সাধারণ জীবনযাপন দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রকাশ ছিল। শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন এবং বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।”
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মাওলানা ভাসানী। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তিনি টাঙ্গাইলের সন্তোষে তার জীবনের বড় অংশ কাটিয়েছেন। তিনি কৈশোর থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে তিনি একজন ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতিও ছিলেন।
মাওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকালে তার মাজারে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। কয়েকদিন আগ থেকেই তার ভক্ত, অনুসারী ও মুরিদানরা সন্তোষে এসে পৌঁছেছেন। এছাড়া, মাওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী ‘ভাসানী মেলা’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।