বিকাশের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করেই অবৈধভাবে পছন্দের দেশের ফ্লাইট শিডিউল কেনার অভিযোগ উঠেছে বিমানের কিছু অসাধু কেবিন ক্রুর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বিমানের এক অনুসন্ধানে এই অনিয়মের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় ৫৮ জন কেবিন ক্রুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং আরও ৪০ জনকে নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, এই কেবিন ক্রুরা এক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা প্রদান করে অবৈধভাবে ফ্লাইটের শিডিউল ক্রয় করতেন। অনুসন্ধানের সময় তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে এই অবৈধ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়। সোনা চোরাচালানসহ অন্যান্য অবৈধ কাজ সহজ করতে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপগামী ফ্লাইটের চাহিদা বেশি ছিল। এসব কেবিন ক্রুদের চোরাকারবারিরা নিজেদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত এবং বিনিময়ে প্রতি ফ্লাইটে মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করত।
বিমানের সিকিউরিটি বিভাগের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে ফ্লাইট শিডিউল নিয়ন্ত্রণকারী শিডিউলার মিরাজসহ বেশ কয়েকজন কেবিন ক্রু এবং কর্মকর্তার বিকাশ অ্যাকাউন্টে এ ধরনের লেনদেন হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বিমানের শিডিউলিং বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। তাদের মধ্যে জুনিয়র পার্সার তাইফ, ফারুক, হাশমি, সরফরাজ এবং আনন্দ একটি সিন্ডিকেট গঠন করে ফ্লাইট শিডিউল বিক্রি করতেন। শিডিউলার মিরাজকে ইতোমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে, তবে সিন্ডিকেটের প্রধানরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
এছাড়া বিমানের নিরাপত্তা বিভাগ আরও কিছু বড় অপরাধের তথ্যও উদঘাটন করেছে। বিভিন্ন অসাধু কেবিন ক্রু বিদেশ থেকে সোনা, ওষুধ ও বিদেশি মুদ্রার চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমনকি বিমানের মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইটগুলোকেও তারা নিজেদের অবৈধ কার্যক্রমে ব্যবহার করতেন।
তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, বিমানের অপারেশন ও শিডিউলিং বিভাগের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা পুরো ব্যবস্থাপনায় বড় সংকট তৈরি করেছে।
বিমান কর্তৃপক্ষ এখন এসব অনিয়ম রোধে সিকিউরিটি বিভাগের তদারকি আরও জোরদার করছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।