শুরু হলো ডিসেম্বর, বিজয়ের মাস। এটি সেই মাস, যখন পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলার সাহসী সন্তানরা অর্জন করে বিজয়ের গৌরব। এই মাসে নতুন উদ্দীপনায় উদযাপন হবে ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক বিজয়ের পরে। দেশের শান্তি, শৃঙ্খলা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গণতন্ত্রের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হবে দেশের মানুষের কণ্ঠে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায়। সেই মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় আসে ১৬ ডিসেম্বর, যখন লাল-সবুজের পতাকা স্থান পায় বিশ্ব মানচিত্রে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি শাসন-শোষণের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
বিজয়ের আগে দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল-শামস বাহিনীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বাংলাদেশের গৌরবময় বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বে আত্মপরিচয় পায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
শিক্ষক ও লেখক আনু মুহাম্মদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল দীর্ঘ লড়াইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে এমন একটি দেশের স্বপ্ন নিয়ে, যা হবে বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, সংবেদনশীল ও মানবিক। মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শক্তি তৈরি হয়েছে।
প্রতি বছরই বিজয়ের মাস ডিসেম্বর নানা আড়ম্বর ও উদ্দীপনায় উদযাপিত হয়। এ বছর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে বিজয় উদযাপনে যুক্ত হয়েছে নতুন প্রত্যাশা। বৈষম্যহীন দেশ গড়ার যে স্বপ্ন শুরু হয়েছে, তা সামনে এগিয়ে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ধ্বনিত হবে সবার কণ্ঠে।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ইতিহাসবিদদের মতে, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আনু মুহাম্মদ বলেন, বৈষম্যহীন রাজনীতি ছাড়া এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। শ্রেণি, ধর্ম, লিঙ্গ ও জাতিগত বৈষম্য দূর করতে হবে। যারা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে কাজ করবে, তাদের সঙ্গেই জনগণ একাত্ম হবে।
এবারের বিজয়ের মাসে দেশের মানুষ বিজয়ের আনন্দে উচ্ছ্বসিত হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে নানা আয়োজনে উচ্চারিত হবে বিজয়ের গৌরবগাথা। এগিয়ে যাবে সফল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন।