আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) উত্তর গোলার্ধে বছরের দীর্ঘতম রাত। একইসঙ্গে আগামীকাল (২২ ডিসেম্বর) হবে এই অঞ্চলের সবচেয়ে ছোট দিন। তবে, দক্ষিণ গোলার্ধে ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যাবে। সূর্যের আলো পড়ার নির্দিষ্ট অবস্থানের কারণে প্রতি বছর চারটি দিন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর মধ্যে দুই দিনে দিন ও রাত সমান হয়, আর দুই দিনে দিন এবং রাতের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য সর্বোচ্চ হয়।
কেন ২১ ডিসেম্বর দীর্ঘতম রাত হয়, তা বুঝতে হলে সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। ভূগোল পাঠে শিখেছি, ২১ জুন বছরের দীর্ঘতম দিন এবং ২১ ডিসেম্বর দীর্ঘতম রাত হিসেবে পরিচিত। সূর্যের দক্ষিণায়নের কারণে এই দীর্ঘতম রাত হয়।
রাত দীর্ঘতম হওয়ার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হলো পৃথিবীর অবস্থান এবং তার অক্ষের হেলানো অবস্থান। পৃথিবীর ঘূর্ণনের সময় তার অক্ষ সামান্য হেলে থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি বা দূরে থাকে। ২১ জুন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে, ফলে বেশি সময় সূর্যালোক পায়। তাই এই দিনটি দীর্ঘতম দিন হিসেবে পরিচিত। একে বলে উত্তরায়ণ বা ‘সামার সলসটিস’। এই সময় থেকে উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট হতে শুরু করে।
সলসটিস শব্দটি এসেছে লাতিন ভাষা থেকে, যার অর্থ “স্থির সূর্য।” এই বছর উইন্টার সলসটিস বা সূর্যের দক্ষিণায়ন শুরু হয়েছে ২১ ডিসেম্বর রাত ১০টা ২৭ মিনিটে এবং শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ৫৭ মিনিটে। দক্ষিণায়নের সময় বৃহস্পতি গ্রহ আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল অবস্থায় থাকবে।
ডিসেম্বর মাসে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে যায়, আর উত্তর গোলার্ধ দূরে সরে যায়। ফলে উত্তর গোলার্ধে সূর্যের আলো কম পড়ে, দিন ছোট হয় এবং রাত দীর্ঘ হয়। এই অবস্থাকে বলা হয় ‘উইন্টার সলসটিস’। অন্যদিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে এই সময় দিন দীর্ঘতম হয় এবং রাত সংক্ষিপ্ত হয়।
এর ফলে উত্তর গোলার্ধে শীতের তীব্রতা বাড়ে, আর দক্ষিণ গোলার্ধে শুরু হয় গ্রীষ্ম। ২১ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে সূর্যের আলো কম সময়ের জন্য থাকে বলে দিন দ্রুত শেষ হয়ে যায়, আর রাত দীর্ঘ হয়।