সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের দাবি অনুযায়ী, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের নিরাপত্তা এজেন্টদের ভাড়া করে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করেছে। ইরানের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, উত্তর তেহরানের আইআরজিসির অতিথি ভবনের তিনটি কক্ষে বোমা স্থাপন করে হানিয়াকে হত্যা করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল গত মে মাসে, যখন হানিয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির দাফনে অংশ নিতে ইরানে ছিলেন। কিন্তু তখন লোকসমাগমের কারণে পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে, ইরানের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওই অতিথি ভবনের তিনটি কক্ষে বোমা স্থাপন করেন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর ওই কক্ষগুলোয় হানিয়ার থাকার সম্ভাবনা ছিল।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে ভবনের কক্ষে প্রবেশ ও বের হন এবং পরে ইরান ত্যাগ করেন। পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর হানিয়া অতিথি ভবনে ওঠেন। সেই সময় অভিযুক্ত দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা হানিয়া কোন কক্ষে রয়েছেন তা জানতে সক্ষম হন। এরপর রাতে বিদেশ থেকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যার ফলে হানিয়ার মৃত্যু ঘটে।
তেহরানের একজন আইআরজিসি কর্মকর্তা দ্য টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন, হামলার পর ভবনের অন্য দুটি কক্ষে বোমার সন্ধান পাওয়া গেছে। তারা নিশ্চিত যে, আনসার আল-মাহদি সুরক্ষা ইউনিটের কর্মকর্তাদের মোসাদ ভাড়া করেছিল। আইআরজিসির অপর এক কর্মকর্তা বলেন, এটি ইরানের জন্য একটি বড় ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘন এবং মানহানির ঘটনা। তবে হামলাকারীদের পক্ষ থেকে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে, যারা এই ঘটনার গুরুত্ব অস্বীকার করে ‘নিরাপত্তা লঙ্ঘন নয়’ বলে প্রচার করছে।
হানিয়ার হত্যার পর ইরানে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে গেছে। আইআরজিসি এই হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে তেল আবিবে সরাসরি হামলার বিষয়টি রয়েছে। ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী আলী ইউনিসি ২০২০ সালে ইরানের কর্মকর্তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কার কথা বলেছিলেন, যা এখন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।