গাজায় সেনা মোতায়েন নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়

ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই মতবিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। সূত্র অনুযায়ী, দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে দুজনের মধ্যে তুমুল বিতর্ক হয়।

ইসরায়েলের বেশ কিছু গণমাধ্যম জানায়, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের মধ্যে তর্ক বাধে ফিলাডেলফি করিডোর থেকে ইসরায়েলি সেনা সরানো হবে কি না, এ নিয়ে। ফিলাডেলফি করিডোরটি গাজা এবং মিসরের সীমান্তে অবস্থিত, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার। বর্তমানে এটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

যুদ্ধবিরতির সময় এই করিডোরে সেনা মোতায়েন থাকবে কি না, তা নিয়ে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতির সময় সীমান্ত এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার সামনে একটি ম্যাপ উপস্থাপন করেন, যাতে তিনি ফিলাডেলফি করিডোরে সেনা মোতায়েন রাখার পরিকল্পনা জানান। গ্যালান্ট এতে আপত্তি জানিয়ে বলেন, এতে হামাস কোনোভাবেই সম্মত হবে না, এবং এর ফলে যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকি জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে যাবে।

দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলে কিছুক্ষণ ধরে। একপর্যায়ে গ্যালান্ট ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীই যেহেতু সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তিনি হয়তো জিম্মিদের মৃত্যুর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এখানে ৩০ জন মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’

পরে নেতানিয়াহুর উপস্থাপিত ম্যাপ নিয়ে ভোটাভুটি হয়। এতে আটটি ভোট নেতানিয়াহুর পক্ষে পড়ে, আর গ্যালান্টের বিপক্ষে। ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ভোটদানে বিরত থাকেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় আড়াইশ জনকে জিম্মি করে। সেই হামলায় অন্তত ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৬৯১ জন নিহত হয়েছেন। এই সংঘাতের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস এবং ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।