কক্সবাজার মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ভয়াবহ দুর্নীতি:
কক্সবাজারের মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কয়লা আমদানির জন্য তিন বছরেই ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রকল্পে দুর্নীতির নানা ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘মাতারবাড়ীতে ১৭৭০ কোটি টাকার দুর্নীতি’ শিরোনামে খবর প্রকাশের পর, ১৫ কোটি টাকার বৈদ্যুতিক তার পাচারের ঘটনা সামনে আসে। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার হয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে গত ২৯ আগস্ট একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম চিঠি প্রদান করেছে, যেখানে মাতারবাড়ী প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কয়লা আমদানির দরপত্র প্রক্রিয়া ধীর করে মেঘনা গ্রুপের ইউনিক সিমেন্ট কনসোর্টিয়ামকে বেআইনি সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
এছাড়া, গত শনিবার রাতে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১৫ কোটি টাকার বৈদ্যুতিক তার পাচারের সময় সাতজনকে আটক করেছে নৌবাহিনী। এই তার পাচারকালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন কর্মকর্তা পালিয়ে যান। পরবর্তীতে আবুল কালাম আজাদকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়।
এদিকে, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানির দরপত্রে অভিযোগ উঠেছে এবং কয়লা থেকে উৎপাদিত ড্রাই অ্যাশ বিক্রির দরপত্রেও বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। সিপিজিসিবিএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এমডি আবুল কালাম আজাদসহ প্রকল্পের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
মাতারবাড়ী প্রকল্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকার দুর্নীতির খবর প্রকাশ পেয়েছে। এতে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রকল্পে ভেরিয়েশন প্রদান, বালু ভরাট, কংক্রিটের সড়ক নির্মাণ এবং নিম্নমানের মালামাল সরবরাহের মতো অভিযোগ উঠেছে।