শুধু রাজধানীতেই নয়, ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মশক নিধন কার্যক্রমে গতি না থাকা এবং সচেতনতার অভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু সংক্রান্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৯২৭ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩২ জন এবং ঢাকার বাইরের ৪৯৫ জন রয়েছেন। অন্যদিকে, এক দিনে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭১৬ জন রোগী। এখন পর্যন্ত চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ হাজার ৩৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং ১৮২ জন মারা গেছেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ নিয়ে কথা বললে দেখা যায়, সরকার পরিবর্তনের পর সিটি করপোরেশন এবং অন্যান্য স্থানীয় প্রশাসন কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সিটি করপোরেশনগুলোর কাউন্সিলরদের পরিবর্তে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, তবে এসব কমিটির কার্যক্রম মাঠপর্যায়ে তেমন দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশক নিধন কার্যক্রমে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়বে।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেছেন, ডেঙ্গু রোগীকে কেন্দ্র করে হটস্পট নির্ধারণ করা প্রয়োজন এবং সেই এলাকায় মশা নিধনে দ্রুত ফগিং মেশিন ব্যবহার করে কার্যক্রম চালানো উচিত। এছাড়াও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার জন্য পানির পাত্র ফেলে দেওয়া অথবা ম্যানেজমেন্ট করা অত্যন্ত জরুরি। নগরবাসীকেও এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে।
ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গুর প্রভাব বেড়ে যাচ্ছে, ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, মাদারীপুরের শিবচরে চাঁদনী আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূ এবং বরিশালে এক তরুণী ও এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।