ভারত থেকে অবৈধ চিনি আমদানি বন্ধ করতে আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। রোববার (৬ অক্টোবর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো চিঠিতে কমিশন উল্লেখ করেছে, বর্তমানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং চোরাচালান বন্ধ করতে শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা উচিত। এতে বৈধ পথে চিনির আমদানি বাড়বে।
বিটিটিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারতের বাজারে চিনির দাম ৪৫-৫০ টাকা প্রতি কেজি হলেও বাংলাদেশের বাজারে তা ১২৫-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুল্কের উচ্চতার কারণে চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে চিনি আসছে, যা চিনির বাজারে উচ্চমূল্য বজায় রাখছে। এনবিআরকে পাঠানো চিঠিতে কমিশন সুপারিশ করেছে, চিনির শুল্ক কমানো এবং সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হলে বাজার স্থিতিশীল হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে গড়ে ১৮ দশমিক ৪৩ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ৪ দশমিক ৫৭ লাখ টন কমে গেছে। একইভাবে, পরিশোধিত চিনির আমদানিও কমে গেছে ১৩ হাজার মেট্রিক টন। কমিশনের মতামত অনুযায়ী, বর্তমান ৩০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করলে সরকারের রাজস্ব কমবে না। একই সঙ্গে, সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়ে চোরাচালানের প্রবণতা রোধের সুপারিশও করা হয়েছে।
টিসিবি জানাচ্ছে, গত এক মাসে রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। শুল্ক কমানোর প্রস্তাবটি এমন সময়ে এসেছে যখন রমজান মাসে চিনির চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কমিশন উল্লেখ করেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম বেড়ে ৪৭৬ ডলারে পৌঁছেছে, যা বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামো পরিবর্তন করা জরুরি করে তুলেছে।
বর্তমানে, প্রতি টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে মোট ৫২ শতাংশ শুল্ককর আরোপ করা রয়েছে, যার মধ্যে ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এআইটি ২ শতাংশ, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ এবং এআইটি ৫ শতাংশ।
ট্যারিফ কমিশনের মতে, বৈধ পথে আমদানি হলে চোরাচালান কমবে এবং বাজারে চিনির সরবরাহ স্থিতিশীল হবে।