সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি আজ

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের পথ উন্মুক্ত হবে কিনা, তা জানা যাবে আজ রবিবার। দীর্ঘ আট বছর পর ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ শুনানির উদ্যোগ নেওয়ায় এ প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষা তৈরি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। রিভিউ শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত রাখার রায় বহাল করার আবেদন করবে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রিভিউ শুনানির উদ্যোগ না নেওয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত পাঁচ বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। রিভিউ নিষ্পত্তি হলে ঐ তিন বিচারপতিসহ ছুটিতে থাকা ১২ বিচারপতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পথ খুলে যাবে।

১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সরিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া হয়। জিয়াউর রহমানের আমলে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি সংবিধানে যুক্ত হয়, যা বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যবহৃত হতো।

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় এই ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনে। সেই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের পর হাইকোর্ট সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে। আপিল করলেও প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন, ফলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়। সরকার এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে, তবে গত আট বছরে এর শুনানি হয়নি।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতন ঘটে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। উচ্চ আদালতের বেশ কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তদন্তের কোনো সুযোগ ছিল না। ফলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রিভিউ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়। রিভিউ নিষ্পত্তি হলে বিচারপতিদের অপসারণের পথ উন্মুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজ্ঞরা।