কুমিল্লা সীমান্তে ভারতে পালিয়ে যাওয়া ছয় জেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বৈঠক এবং মুজিবনগর সরকারের আদলে সরকার গঠনের গুঞ্জন ছড়িয়েছে। শনিবার দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এমন গুজব প্রতিরোধে বিজিবি ও পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লার পক্ষ থেকে এই ষড়যন্ত্র প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর টাউন হল মাঠ থেকে মশাল মিছিল বের করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও আবদুল হান্নান মাসুদ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার বিবিরবাজার সীমান্তে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ফেনী জেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শনিবার দুপুর ৩টার দিকে বৈঠক করেন। আগামী রবিবার ভারতের ত্রিপুরায় আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। এমনকি ভারতের বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সভায় উপস্থিত হয়ে একাত্তরের মুজিবনগর সরকারের আদলে একটি অস্থায়ী সরকারের ঘোষণা দিতে পারেন। পুরো বিষয়টি সমন্বয় করছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা।
তবে এই গুঞ্জনের সত্যতা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লার পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের একটি বার্তা পাঠানো হয়েছে, যাতে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী বিবিরবাজার সীমান্তে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চাঁদপুর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করবেন এবং আগরতলায় শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মুজিবনগর সরকারের আদলে সরকার ঘোষণা করবেন।
এর প্রতিবাদে ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা নগরীতে মশাল মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলের শুরুতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে তারা ফ্যাসিবাদের রূপকার শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন। তিনি জানান, ফ্যাসিবাদের গংরা কুমিল্লার পার্শ্ববর্তী সীমান্তে জমায়েত হওয়ার চেষ্টা করছেন।
হাসনাত আরও বলেন, তারা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চান, এই ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা বাংলার মাটিতে কখনও সফল হবে না। ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং অন্য দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর সীমান্তে সাদা পোশাকে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, কিন্তু গুঞ্জনের সত্যতা মেলেনি। তারপরও পুলিশ প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
কুমিল্লা-১০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইফতেখার হোসেন জানান, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ ধরনের খবর তাদের কাছে এসেছে। সীমান্তে বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং যে কোনো অপতৎপরতা প্রতিরোধে তারা প্রস্তুত।