শিরোনাম

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জন্মদিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ মাস আগে
ছবি : মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী

আজ মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪৫তম জন্মদিন। ব্রিটিশ শাসিত ভারতে গণআন্দোলনের অন্যতম নেতারূপে পরিচিত এই মহান ব্যক্তিত্ব ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টাদের মধ্যে অন্যতম।

এই উপলক্ষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।

১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়াপল্লী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মওলানা ভাসানী। তিনি হাজি শারাফত আলী ও বেগম শারাফত আলীর পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। শৈশবে তাকে ‘চেগা মিয়া’ নামে ডাকা হতো।

ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনের জন্য তিনি ১৯০৭ সালে দেওবন্দে যান এবং দুই বছর সেখানে অধ্যয়ন শেষে আসামে ফিরে আসেন। ১৯১৭ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের ময়মনসিংহ সফরে তার ভাষণ শুনে অনুপ্রাণিত হন মওলানা ভাসানী।

মওলানা ভাসানী মুসলমানদের ঈমান-আকিদার আলোকে মজলুমদের পক্ষে দাঁড়ানোর পথনির্দেশ করেছিলেন। তার দীর্ঘ সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ গঠন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি একটি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯১৯ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন এবং খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১০ মাস কারাবরণ করেন। ১৯২৬ সালে আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূচনা করেন এবং ১৯২৯ সালে ধুবড়ীর ভাসানচরে প্রথম কৃষক সম্মেলনের আয়োজন করেন। এখান থেকেই তার নামের শেষে ‘ভাসানী’ যুক্ত হয়।

ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি ১৯৪৮ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। তার এই প্রতিবাদই তাকে সরকারবিরোধী ভূমিকায় নিয়ে আসে।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৮ সালের আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতে যান এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৬ সালে ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক লংমার্চের মাধ্যমে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।

১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এবং টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে সমাহিত করা হয়। তার অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়। ২০০৪ সালে বিবিসি’র জরিপে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় তিনি অষ্টম স্থান অধিকার করেন।