আজ, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে অবস্থিত বিএডিসি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএ) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে সিড শিল্পের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করতে এজিএমটি আয়োজন করা হয়। সভায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএসএ-এর সদস্যবৃন্দ, সিড শিল্পের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এবং কৃষি ইনপুট ডিলাররা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশন দেশের সিড শিল্পের নেতৃত্বদানকারী একটি সংগঠন, যা দেশের কৃষি উন্নয়নে গুণগত মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এই এজিএম আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সংগঠনের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ এবং কৃষি খাতে গুণগতমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিডের ভূমিকা আরও সুসংহত করা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসএ-এর সভাপতি এম আনিস উদ দৌলা এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন বিএসএ-এর সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আলী আফজাল। কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও দেশের কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে এম আনিস উদ দৌলা বলেন, “কৃষির উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হলো মানসম্পন্ন বীজ। এটি শুধুমাত্র খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নয়, বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে সিড শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম।
বিএসএ-এর সাধারণ সম্পাদক ড. আলী আফজাল তার বক্তব্যে বলেন, “সিড খাত দেশের কৃষি ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উন্নত প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন এবং তা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের অগ্রাধিকার।”
তিনি আরও বলেন, “বীজ হলো জীবন। সঠিক মানের বীজ দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।” বিএসএ-এর পক্ষ থেকে তিনি কৃষকদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন এবং জানান, ভবিষ্যতে আরও উন্নতমানের সিড সরবরাহে বড় ধরনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, গবেষক এবং সিড কোম্পানির প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথিরা বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি খাতকে আরও শক্তিশালী করতে সিড শিল্পের অবদান অবিস্মরণীয়। মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন এবং বিতরণ একটি দেশের কৃষি খাতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।”
তারা আরও বলেন, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি এবং গবেষণার মাধ্যমে বীজ খাতে উন্নতি আনতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিড শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি রপ্তানির ক্ষেত্রেও বড় সাফল্য অর্জন সম্ভব।
সভায় বিএসএ-এর পক্ষ থেকে আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। ভবিষ্যৎ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে:
বিএসএ-এর পক্ষ থেকে সারা দেশের কৃষি ইনপুট ডিলারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়, যারা মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহের মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নে অবদান রাখছেন। সভায় বক্তারা বলেন, “কৃষি ইনপুট ডিলাররা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের সঠিক নির্দেশনা এবং মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের ফলে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।”
সভায় সিড গবেষণার অগ্রগতির ওপর জোর দেওয়া হয়। বক্তারা বলেন, নতুন জাতের বীজ উদ্ভাবন এবং সেগুলোর মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলক চাষাবাদ সিড শিল্পের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ এবং সহযোগিতা আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।
বক্তারা কৃষি খাতকে দেশের অর্থনীতির অন্যতম মেরুদণ্ড হিসেবে আখ্যা দেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য বীজ খাতের আরও বিকাশ ঘটানো অত্যন্ত জরুরি।