শিরোনাম

ফেনীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে
ছবি : সংগৃহীত

ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধের ১৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে অন্তত ৩০টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

৮ জুলাই (মঙ্গলবার) রাত দেড়টা নাগাদ বিভিন্ন স্থানে পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনা এলাকায় দুইটি, অলকায় তিনটি, শালধরে একটি এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুরে একটি স্থানে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে। এছাড়া, সিলোনিয়া নদীর গদানগর ও দেড়পড়া এলাকায় এবং কহুয়া নদীর সাতকুচিয়া, বেড়াবাড়িয়া ও দৌলতপুরে বাঁধ ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে।

পরশুরামের মধ্যম ধনীকুন্ডার বাসিন্দা নাহিদা সুলতানা জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই ঘরে পানি উঠতে শুরু করে, পরে ছাদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। তিনি বলেন, গত বছরের বন্যাতেও তাঁদের ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছিল, এবারও একই দুর্ভোগের শিকার হলেন।

অন্যদিকে, মির্জানগরের রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো বল্লামুখা বাঁধের প্রবেশপথ বন্ধ করেনি, ফলে পানির ঢল ঠেকানো সম্ভব হয়নি। প্রতিবছর কিছু অসচেতন কর্তৃপক্ষের কারণে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

পরশুরাম উপজেলার ইউএনও আরিফুর রহমান জানান, ভাঙনের ফলে প্রতিনিয়ত নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না। ফুলগাজীর ইউএনও ফাহরিয়া ইসলাম জানান, উপজেলার চারটি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাঁদের জন্য শুকনো ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বুধবারের সব অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আরও দুদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, মুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও নদীগুলোর পানি এখনও বিপদসীমার ওপরে। উজানে বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ফুলগাজীতে ৯৯টি এবং পরশুরামে ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দেড় শতাধিক মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গতদের সহায়তায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।