ঢাকা মহানগরীর সড়ক ও মহাসড়কে ছিনতাই প্রতিরোধে ট্রাফিক সার্জেন্টদের হালকা অস্ত্র (স্মল আর্মস) দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর উত্তরার আজমপুর কাঁচাবাজার (বিডিআর মার্কেট) এলাকায় ঢাকা মহানগরে কাউন্টার ও ই-টিকিটিং ব্যবস্থার আওতায় বাস চলাচলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাউন্টার ভিত্তিক বাস চলাচলের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। যাত্রী, চালক ও পরিবহন মালিক— সবারই সচেতন হওয়া জরুরি। প্রয়োজনে ট্রাফিক পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে।
তিনি মালিকদের উদ্দেশে বলেন, চালকদের নিয়োগপত্র দিতে হবে এবং এতে নির্দিষ্ট শর্তাবলী উল্লেখ থাকতে হবে।
সাজ্জাত আলী আরও জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনা তার নজরে এসেছে। জনবলের ঘাটতির কারণে অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই ট্রাফিক সার্জেন্টদের জন্য হালকা অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ছিনতাইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির অভিযোগ পাওয়ার পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যাপক ধরপাকড়ের ফলে অসংখ্য ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার হয়েছে, যার ফলে গত ১৫ দিন ধরে ছিনতাইয়ের হার আগের তুলনায় কমে এসেছে। এই অভিযান কঠোরভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা ও ভাঙচুর প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত আমি নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি।”
সম্প্রতি রাজধানীতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে। এমনকি গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বল্প সময়ের মধ্যেই জামিনে মুক্তি পাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। উদাহরণ হিসেবে গুলশানে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রকাশ্যে এক কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই জামিন দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এছাড়া, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ভ্যানগাড়ি ছিনতাইয়ের জন্য ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার পর তার মরদেহ সরিষা ক্ষেতে মাটিচাপা দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে।
অন্যদিকে, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে একটি অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় পরিবারের লোকজন পুলিশকে মারধর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এতে পুলিশের সদস্যরাও আহত হয়েছেন এবং তাদের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় রাতের ঢাকা যেন অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশি টহল বা চেকপোস্টের অভাব নগরবাসীকে উদ্বেগে ফেলেছে।