আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের বারমাল জেলায় পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতের এই হামলার পর এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়াতুল্লাহ খোয়ারজমি বলেন, “এই হামলা আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। আমাদের ভূমি রক্ষা করা বৈধ অধিকার। পাকিস্তানের এই আক্রমণ বেসামরিক লোকদের ওপর চালানো হয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই ওয়াজিরিস্তানি উদ্বাস্তু। এ হামলায় নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন।”
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা এখনো হামলার বিষয়টি সরাসরি নিশ্চিত না করলেও নিরাপত্তা সূত্র জানায়, এই বিমান হামলা পাকিস্তানি তালেবানদের (টিটিপি) ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। তাদের দাবি, আফগানিস্তান পাকিস্তানের তালেবানদের সহায়তা করছে এবং সীমান্ত অস্থিতিশীল করে তুলছে।
তবে তালেবান মুখপাত্র খোয়ারজমি পাকিস্তানের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, “হামলায় শুধু নিরীহ বেসামরিক লোকজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও পরিবারের সদস্য রয়েছেন।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খামা প্রেসের বরাতে জানা যায়, হামলায় অন্তত ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বারমাল জেলার লামন গ্রামে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। মুর্গ বাজার এলাকাতেও একটি গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ জনগণ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান হামলার সময় তারা বিমানের গর্জন শুনেছেন এবং মুহূর্তের মধ্যেই বিস্ফোরণে গ্রামগুলো কেঁপে ওঠে।
পাকিস্তানের এই বিমান হামলার ফলে আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এমনকি সীমান্ত অঞ্চলে সক্রিয় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রস্তুতি নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, “আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমরা সবধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এ ধরনের আক্রমণ মেনে নেওয়া হবে না, এবং এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।”