ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এক বার্তায় দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, “আমরা কঠিন সময় পার করব।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া ওই বক্তব্যে তিনি সরকারের সব বিভাগকে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে দেশের জন্য কাজ করে। — খবর: বিবিসি।
পেজেশকিয়ান বলেন, “সকল মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—তারা যেন তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা ও সম্পদ ব্যবহার করে ইরানের স্বার্থে কাজ করে। এই সংকটময় মুহূর্তে ধৈর্য ও জনগণের সহযোগিতা খুব জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “ঈশ্বরের রহমত, জাতির ঐক্য ও সহমর্মিতার মাধ্যমে আমরা এই কঠিন পরিস্থিতি অতিক্রম করতে পারব।”
এদিকে, ইসরায়েল ইরানের নাতাঞ্জ শহরের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এটি আহমেদাবাদের কাছে অবস্থিত শহীদ আহমাদি রোশন পারমাণবিক স্থাপনা, যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কাজে ব্যবহৃত হয়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, এই স্থাপনাটি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত এবং সেখানে এমন যন্ত্রাংশ রয়েছে, যেগুলো পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে সহায়ক।
ইসরায়েল জানিয়েছে, বুধবার রাতে তাদের বিমান বাহিনী এই হামলা চালায়। নাতাঞ্জে এর আগেও ১৪ জুন হামলা হয়েছিল, যেখানে ইরানের কয়েকজন উচ্চপদস্থ জেনারেল নিহত হয়েছিলেন। নাতাঞ্জ ইরানের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এটি একটি বাংকার-সুরক্ষিত স্থাপনা এবং ২০০২ সালে এর অস্তিত্ব প্রথম প্রকাশ পায়। এখানে প্রায় ৭০টি সেন্ট্রিফিউজের সারি রয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে ইসরায়েলের হোলোন, তেল আবিব ও রামাতগন শহরে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, হোলোনে হামলায় তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রামাতগনে প্রায় ২০ জন হালকা আঘাত পেয়েছেন। তেল আবিবেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলের উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ইরানের এদিনের হামলায় মোট আহতের সংখ্যা ৬৫ জনে পৌঁছেছে।
এক বিবৃতিতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী জানিয়েছে, এটি ছিল ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালিত ১৪তম বৃহৎ ও সমন্বিত হামলা, যা তারা একাধিক কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে চালিয়েছে। তবে তারা হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।