অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ১০০ জনের বেশি। রাতভর বিমান হামলার ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত এই সংঘাতে প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫১ হাজার ৩০৫ ছাড়িয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক হামলায় ৪৫ জন নিহত হন এবং শতাধিক আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা সূত্র জানায়, অধিকাংশ আহতের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অন্যদিকে, তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত মোট প্রাণহানির সংখ্যা ৫১ হাজার ৩০৫ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আহতদের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বা রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছেন, যাদের উদ্ধার করতে পারেনি উদ্ধারকারীরা।
প্রায় ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে শান্তির এই ক্ষণস্থায়ী সময় পেরিয়ে গত মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল, মূলত হামাসের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া এই হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৯২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি। এই হামলা কার্যত জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে।
জাতিসংঘ জানায়, ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ অবকাঠামো সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
এই আগ্রাসনের দায়ে ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সর্বশেষ দফার হামলায় ইতোমধ্যে ১ হাজার ৯০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।