অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫০ জনের বেশি। এ নিয়ে গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫১ হাজার ২৫০ জনে পৌঁছেছে।
তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানায়, গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করলে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টার ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৯ জনের সঙ্গে মোট মৃতের সংখ্যা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২৪০ জনে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬২ জন। ফলে সামগ্রিকভাবে আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জনে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বা রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
টানা ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী অভিযান শেষে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর প্রায় দুই মাস অঞ্চলটিতে তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করলেও, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মতবিরোধের জেরে আবারও হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই নতুন দফার হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৮৬৪ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার ৯০০ জন। এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে লঙ্ঘন করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া এই উপত্যকার প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গাজায় চালানো গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও একটি মামলা চলমান রয়েছে।