শিরোনাম

ইস্পাহানে যে কারণে বাংকার বাস্টার ফেলেনি যুক্তরাষ্ট্র

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৫ দিন আগে
ছবি : সংগৃহীত

ইরানের ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে কেন ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করা হয়নি, তা নিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। কেন্দ্রটি মাটির অনেক গভীরে অবস্থিত হওয়ায় ওই বোমাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়, আর সেই কারণেই এই হামলা কৌশল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করেছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এমনভাবে নির্মিত যে, সেগুলো সহজে ধ্বংস করা যায় না। ইরানের এই কৌশলগত স্থাপত্যের দক্ষতাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে ওয়াশিংটন।

সিএনএনের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধ্য ইরানের ইস্পাহানে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনাটি এতটাই গভীরে অবস্থিত যে প্রচলিত ‘বাংকার বাস্টার’ বোমাও সেখানে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হতে পারে—এই আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র হামলা কৌশল বদলে সাবমেরিন থেকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে।

এই বিষয়ে মার্কিন সেনেটের একটি গোপন ব্রিফিংয়ে জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন জানান, ইস্পাহানের কেন্দ্রটি এতটাই নিচে যে, এমনকি এমওপি বা ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটরের মতো শক্তিশালী বোমাও সেখানে পৌঁছাতো না। ফলে বিকল্প হামলা পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়।

মার্কিন গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সূত্রগুলো জানায়, ইস্পাহানের ভূগর্ভস্থ স্থাপনাটিতে ইরানের প্রায় ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সংরক্ষিত রয়েছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ইউরেনিয়াম যেন অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত না হয়, সেই উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়। তবে কেন্দ্রটির গভীরতা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে হামলার প্রকৃত ফলাফল নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে।

অন্যদিকে, ইরানের ফোরদো ও নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান থেকে ডজনখানেক বাংকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু ইস্পাহানে হামলার জন্য শুধু একটি মার্কিন সাবমেরিন থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়।

এ সময় এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে আসেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির অবস্থান সম্পর্কে তিনি জানতেন এবং ইচ্ছা করলেই তাকে হত্যা করতে পারতেন। তবে বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্য রক্ষার কথা ভেবে তিনি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি খামেনিকে “নির্মম মৃত্যু” থেকে রক্ষা করেছেন।

এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করলেও তা থেকে কিছুই অর্জন করতে পারেনি। বরং ইরানই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়েছে। এই বক্তব্যে চটে গিয়ে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার চিন্তা করছিলেন, কিন্তু খামেনির কথিত ‘ভুয়া বিজয়ের দাবি’র পর সেই পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।