নেপাল বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পে চীনের সঙ্গে একটি কাঠামোগত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দেশটিতে চীনের প্রভাব বিস্তারের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রাথমিক সমঝোতার সাত বছর পর, নেপাল আনুষ্ঠানিকভাবে বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হলো।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা ওলি চার দিনের চীন সফরে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রথম সফরের জন্য দিল্লি নির্বাচন না করে বেইজিংকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তিনি। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা এবং চুক্তি চূড়ান্ত করাই ছিল এই সফরের মূল লক্ষ্য।
২০১৭ সালে নেপাল ও চীন বিআরআই প্রকল্প নিয়ে প্রাথমিক চুক্তি করলেও গত সাত বছরে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এর পেছনে অন্যতম কারণ ছিল চুক্তির কাঠামো চূড়ান্ত না হওয়া এবং নেপালের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্যের অভাব।
নতুন চুক্তির অধীনে, উভয় দেশ সড়ক উন্নয়ন, পরিবহন করিডর নির্মাণ এবং প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে কাজ করবে। তবে ঋণনির্ভর প্রকল্প নিয়ে নেপালের অভ্যন্তরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষত, নেপালি কংগ্রেস ঋণনির্ভর প্রকল্পে আপত্তি জানিয়েছে।
নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ জানিয়েছে, নেপাল ও চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) কাঠামো চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তবে চুক্তির সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
চীন এরই মধ্যে পোখারায় একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে নেপালকে ২১৬ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি গত বছর চালু হয়েছে। চীন এটিকে বিআরআই প্রকল্পের একটি সফল উদাহরণ হিসেবে দাবি করলেও, ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি না পাওয়ায় এটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংকটে রয়েছে।
ভারত ক্রমাগত দক্ষিণ এশিয়ায় তার মিত্র হারাতে বসেছে। শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে দিল্লি চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। নেপাল নিয়ে আগে থেকেই অস্বস্তি ছিল, আর চীনের সঙ্গে নতুন এই চুক্তি দিল্লির উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।