সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর আলেপ্পো, ইদলিব এবং হামা সম্প্রতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আক্রমণের মুখে পড়ে। শুরুতে সরকারি বাহিনী কিছুটা পিছু হটলেও এখন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে সিরিয়া এবং রাশিয়ার যৌথ বাহিনী বিমান হামলা চালাচ্ছে। শনিবার থেকে তারা ইদলিব এবং আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিদ্রোহীদের ‘মিলিটারি অপারেশন কমান্ড’ জানিয়েছে, রাজনৈতিক সমাধান না আসা পর্যন্ত লড়াই চলবে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করে বলেছেন, মিত্র দেশ রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে।
বাশার আল-আসাদ আরও বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সিরিয়া এই প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে। বিদ্রোহীদের আক্রমণ যত বড়ই হোক না কেন, মিত্রদের সহযোগিতায় তা মোকাবিলা করা সম্ভব।
অন্যদিকে, সিরিয়ার বিরোধী নেতা হাদি আল-বাহরি ইস্তাম্বুল থেকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, জাতিসংঘের নেতৃত্বে কোনো রাজনৈতিক সমাধান না আসা পর্যন্ত বিদ্রোহীরা লড়াই চালিয়ে যাবে।
সম্প্রতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সিরিয়ার আলেপ্পোর বেশিরভাগ এলাকা দখল করেছে। এরপর তারা হামার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শুক্রবার তারা আকস্মিক হামলায় আলেপ্পোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রবেশ করে, যা দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক রামি আবদুল রহমান জানিয়েছেন, আলেপ্পোর অর্ধেকেরও বেশি এলাকা এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। এর ফলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তাঁর শাসনামলের সবচেয়ে গুরুতর সংকটে পড়েছেন।
রাশিয়া এবং ইরান আসাদ সরকারকে সমর্থন জানালেও উভয় দেশ নিজ নিজ সংঘাত নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সিরিয়ার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তবে রাশিয়া ও ইরান ইতোমধ্যে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে বিমান হামলা চালিয়েছে এবং ইরাক থেকে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীকে সহায়তা করছে।
গত সপ্তাহে সিরিয়া এবং রাশিয়ার যৌথ বিমান হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে বলে রুশ সংবাদমাধ্যম তাস জানিয়েছে। বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে থাকা এইচটিএস মূলত আল-নুসরা নামেও পরিচিত, যা একসময় আল-কায়েদার সহযোগী ছিল। এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বেশ কয়েকটি গ্রুপ, যার মধ্যে রয়েছে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি এবং সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস।