মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্ক কার্যকর হলেও মোবাইল, কম্পিউটারসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য এর আওতার বাইরে থাকবে। চীন থেকে আমদানি হওয়া এসব পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে, তা ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না—এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (CBP)।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা দিন দিন আরও বাড়ছে। একে অপরের পণ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ চীন থেকে আমদানি হওয়া কিছু পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে এই শুল্ক কার্যকর হবে না স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, সেমিকন্ডাক্টর, সোলার প্যানেল ও মেমোরি কার্ডসহ নানা ধরনের প্রযুক্তিপণ্যের ক্ষেত্রে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) CBP-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেশিরভাগ ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। এর ফলে চীনে উৎপাদিত আইফোন বা স্যামসাংয়ের স্মার্টফোনের দাম বাড়বে না, যা প্রযুক্তি পণ্য বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন সাময়িকভাবে বিশ্বজুড়ে পণ্যে শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৯০ দিনের জন্য এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ৯০টি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের। এসব আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন তার বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো।
তবে সমালোচকরা মনে করছেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে এত চুক্তি বাস্তবায়ন করা প্রায় অসম্ভব। অতীতে দেখা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্ন করতে ট্রাম্প প্রশাসনের সময় লেগেছিল প্রায় আট মাস। আর কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে একটি বৃহৎ চুক্তি বাস্তবায়নে লেগেছিল দুই বছরেরও বেশি।
এদিকে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বহু পুরনো মিত্র রাষ্ট্র এখন ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতি ও আচরণে অসন্তুষ্ট। অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স বিজনেসকে জানিয়েছেন, চীনকে প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্র জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনায় বসবে।
তবে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দীর্ঘদিনের অপমানজনক মন্তব্য ও একের পর এক শুল্ক আরোপের কারণে অনেক দেশ এখন চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে আগ্রহ হারাচ্ছে।