শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানী কলম্বোতে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে তিনি শপথ গ্রহণ করেন।
বিবিসির খবর অনুযায়ী, শপথ গ্রহণের পর দিশানায়েকে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করব।”
৫৫ বছর বয়সী নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি বাজিকর নই, জাদুকরও নই। কিছু বিষয় আমি জানি, আবার কিছু জানি না, তবে আমি সেরা পরামর্শ চাইব এবং আমার সর্বোত্তম চেষ্টা করব। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
গতকাল রোববার, দেশটির নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করে যে শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের প্রার্থী দিশানায়েকে বিজয়ী হয়েছেন।
কলম্বো থেকে সিনহুয়া জানাচ্ছে, কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা করা হয়। প্রথম গণনায় দিশানায়েকে ৫৬ লাখ ৩৪ হাজার ৯১৫ ভোট এবং দ্বিতীয় গণনায় ১ লাখ ৫ হাজার ২৬৪ ভোট পান।
তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, বিরোধী সামাগি জনা বালাওয়েগার প্রার্থী সজিথ প্রেমাদাসা প্রথম গণনায় ৪৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩৫ ভোট এবং দ্বিতীয় গণনায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৬৭ ভোট পান।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (পূর্বে টুইটার) এ একটি পোস্টে দিশানায়েকে বলেন, “আশা ও প্রত্যাশায় ভরা লাখ লাখ চোখ আমাদের এগিয়ে নিতে প্রেরণা জোগায় এবং আমরা একসঙ্গে শ্রীলঙ্কার ইতিহাস নতুন করে লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই স্বপ্ন কেবল নতুন সূচনার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতে পারে। সিংহলি, তামিল, মুসলিম এবং সকল শ্রীলঙ্কানদের ঐক্য এই নতুন সূচনার ভিত্তি। আমরা যে নতুন রেনেসাঁ চাই, তা এই সম্মিলিত শক্তি ও স্বপ্ন থেকে জেগে উঠবে।
২০২২ সালের ১৩ জুলাই গণ-বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসা সরকারের পতন ঘটে, এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। ওই ঘটনার এক সপ্তাহ পর রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। গণ-বিক্ষোভের দুই বছর পর দেশটিতে গত শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।