শিরোনাম

সিরিয়া প্রতিবেশী বা পশ্চিমাদের জন্য হুমকি নয়: এইচটিএস প্রধান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ দিন আগে
ছবি : সংগৃহীত

সিরিয়ার সামরিক প্রশাসনের নতুন নেতা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর প্রধান আহমাদ আল-শারা জানিয়েছেন, তার দেশ দীর্ঘ এক দশকের যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং বর্তমানে এটি আর প্রতিবেশী দেশ বা পশ্চিমাদের জন্য কোনো হুমকি নয়।

দামেস্কে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সিরিয়ার ওপর আরোপিত সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। শারা বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া উচিত। পুরনো শাসন ব্যবস্থার জন্য আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো এখন আর কার্যকর নয়। শিকার এবং নিপীড়ক উভয়ের জন্য একই ধরনের ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা উচিত নয়।”

শারা বিদ্রোহী জোটের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোষ্ঠী এইচটিএস-এর নেতা, যিনি আগে আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন। দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে তার নেতৃত্বে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো বাশার আল-আসাদের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তারা দামেস্কে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালিকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়।

একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত এইচটিএস এখন নিজেদের বদলে ফেলার দাবি করেছে। শারা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটি সবার জন্য গ্রহণযোগ্য শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। আমরা কখনও বেসামরিক মানুষ বা তাদের এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালাইনি। বরং আমরাই আসাদ সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছি।”

এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শারা বলেন, “এইচটিএস এখন সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। আমরা দেশকে পুনর্গঠনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।”

নারী শিক্ষার ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান জানিয়ে শারা বলেন, “ইদলিবে আমাদের পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী। আমরা নারী শিক্ষার প্রতি সমর্থন জানাই।” তবে মদ্যপান সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। এ বিষয়ে শারা বলেন, “এগুলো আইন প্রণয়নের বিষয়। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে সংবিধান প্রণয়ন করা হবে এবং সেই সংবিধান অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হবে।”

শারা আরও জানান, সিরিয়া আফগানিস্তানের মতো গোষ্ঠীভিত্তিক সমাজব্যবস্থায় গড়ে উঠবে না। তিনি বলেন, “সিরিয়ার মানুষের চিন্তাধারা ভিন্ন। এখানে ভিন্ন ধরনের শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”

বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেওয়া ভাষণে শারা তার অতীতের চরমপন্থা থেকে সরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ইরানের সমর্থনে ছড়ানো সাম্প্রদায়িকতা এবং দেশীয় দুর্নীতির তীব্র সমালোচনা করেন।