মোস্তাফিজ যে ছয়জনকে আউট করেছেন, তাদের স্রেফ একজনেরই জন্মভূমি যুক্তরাষ্ট্র!
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান পাঁচটির বেশি উইকেট নিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের জার্সি পরিহিত ছয়জনকে তিনি পাঠিয়েছেন প্যাভিলিয়নে।
দলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জন্ম নেওয়া ক্রিকেটারদের সংখ্যা কম নয়।
তবে মোস্তাফিজের শিকারগুলোর বেলায় ঘটেছে এমনই এক কাকতালীয় ব্যাপার যে, বাঁহাতি এই পেসারের ঝুলিতে ঢোকা ছয়জনের জন্ম হয়েছে ছয়টি ভিন্ন দেশে।
গত শনিবার হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে মোস্তাফিজ গড়েছেন বাংলাদেশের হয়ে সেরা টি-টোয়েন্টি বোলিংয়ের রেকর্ড। ৪ ওভারে একটি মেডেনসহ মাত্র ১০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ফলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ম্যাচে ৬ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানির ১৩ রানে ৫ উইকেট ছিল আগের সেরা।
দ্য ফিজ খ্যাত তারকা প্রথম উইকেটের দেখা পান নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই। ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারে যে শায়ান জাহাঙ্গীরকে তিনি আউট করেন, তার জন্ম হয়েছে পাকিস্তানে। দশম ওভারে আক্রমণে ফিরে তিনি ধরেন আরেক শিকার। সেবার সাজঘরে ফিরতে হয়েছিল নিতিশ কুমারকে। অতীতে কানাডার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলা নিতিশের জন্মও কানাডায়।
মোস্তাফিজ নিজের পরের দুই ওভারে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে আরও দুটি করে উইকেট নেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংসের ১৮তম ওভারে তার দুই শিকারের একজন, শ্যাডলি ভ্যান শ্যালকউইকের জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকা। কেপটাউনে জন্ম হয়েছিল এই অলরাউন্ডারের।
আরেক শিকার কোরি অ্যান্ডারসনের মাতৃভূমি কোথায় তা বলে দিতে হবে না নিশ্চয়ই? নিউজিল্যান্ডে জন্ম নেওয়া এই অলরাউন্ডারকে কাটার মাস্টার করেন বোল্ড।
স্বাগতিকদের কাছে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে হারলেও সিরিজসেরা হওয়া মোস্তাফিজ ইনিংসের শেষ ওভারে প্রথমে জাসদিপ সিংকে আউট করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই খেলোয়াড়ের জন্ম মার্কিন মুলুকেই। আর তার উইকেটের ঝুলিতে সবার শেষে ঢোকে নিসর্গ প্যাটেলের নাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের পৃথিবীতে আগমন ঘটেছে ভারতের গুজরাট অঞ্চলে। অর্থাৎ মোস্তাফিজ যে ছয়জনকে আউট করেছেন, তাদের স্রেফ একজনেরই জন্মভূমি যুক্তরাষ্ট্র!
এক দেশে জন্ম, কিন্তু খেলেন আরেক দেশের হয়ে- সহযোগী দেশগুলোর ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায় নিয়মিতই। তবে যাদের আউট করেছেন, তাদের সবার জন্ম ভিন্ন ভিন্ন দেশে, তাও আবার ছয়-ছয়টি দেশ!
এমন অভিজ্ঞতা হয়তো আর কোনো ক্রিকেটারের জীবনেই আসেনি। মোস্তাফিজ সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী এক গল্পেরই জন্ম দিয়েছেন।