শিরোনাম

রোনালদোর শেষ মুহূর্তের গোলে পর্তুগালের নাটকীয় জয়

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

রোনালদো-ফের্নান্দেসদের আক্রমণের ঢেউয়ের সামনে শান্ত থেকে, রক্ষণ জমাট রেখে ঘর আগলে রাখল চেক প্রজাতন্ত্র। প্রতিপক্ষের শত চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে আচমকা এক গোলে তারাই জাগাল জয়ের সম্ভাবনা। কিন্তু তাদের ক্ষণিকের ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ পেয়ে গেল পর্তুগাল। আর শেষ মুহূর্তে বদলি নেমে, যোগ করা সময়ে দলকে জয়োল্লাসে ভাসালেন ফ্রান্সিসকো কনসেইকাও।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে লাইপজিগে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ২-১ গোলে জিতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরু করল পর্তুগাল। পুরো ম্যাচে মাত্র ২৫ শতাংশ পজেশন রাখতে পারা চেক দল পাঁচটি শটের মধ্যে মাত্র একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে, যেটি থেকে গোল করেন লুকাশ প্রোভোদ। তিন পয়েন্টের জন্য সেটাই যথেষ্ট হতে পারত; কিন্তু দুটি মারাত্মক ভুলে সব হারাল গত আসরে কোয়ার্টার-ফাইনাল খেলা দলটি।

মাঠে নেমে নিজেদের গুছিয়ে নিতে কিছুটা সময় নেয় পর্তুগাল, এরপর শুরু করে একের পর এক আক্রমণ। অষ্টম মিনিটে ভালো একটি সুযোগও পায় তারা; রাফায়েল লেয়াওয়ের ক্রসে ঠিকঠাক হেড করতে পারেননি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।
প্রবল চাপের মুখে দারুণ দৃঢ়তায় রক্ষণ সামলাতে থাকে চেক প্রজাতন্ত্র। ২৪তম মিনিটে ব্রুনো ফের্নান্দেসের অনেক দূর থেকে নেওয়া শট একজনের পায়ে লেগে ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। দুই মিনিট পর হতে পারত গোল; কিন্তু ফের্নান্দেসের গোলমুখে বাড়ানো ক্রসে স্লাইড করেও প্রয়োজনীয় ছোঁয়াটা দিতে পারেননি লেয়াও।

৩২তম মিনিটে ফের্নান্দেস বক্সে দুর্দান্ত এক থ্রু পাস বাড়ান, গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান রোনালদো। তবে ছুটে গিয়ে প্রথম ছোঁয়ায় নেওয়া তার শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন গোলরক্ষক স্তানেক। লক্ষ্যে এটাই তাদের প্রথম শট। প্রতিপক্ষের আক্রমণের ঢেউ সামলাতে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে চেক। বিরতির আগে আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড গোলদাতা রোনালদোর আরেকটি জোরাল শট দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন স্তানেক।

প্রথমার্ধে বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করে, গোলের জন্য ৯টি শট নিয়ে তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে পর্তুগাল। বিরতির পরও একইভাবে চাপ ধরে রাখে তারা। বলা যায়, আক্রমণে ওঠারই সুযোগ পাচ্ছিল না চেক। সেই তারাই ৬২তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিয়েই এগিয়ে যায়। একটি কর্নারের ফলশ্রুতিতে সতীর্থের কাটব্যাক বক্সের বাইরে পেয়ে জোরাল বাঁকানো শটে দল-সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে ভাসান মিডফিল্ডার প্রোভোদ।

সাত মিনিট পর প্রতিপক্ষের দুর্ভাগ্যে পর্তুগিজ শিবিরে সমতার স্বস্তি ফেরে। নুনো মেন্দেজের হেড গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ফেরালেও বল হাতে রাখতে পারেননি, আলগা বল সামনেই থাকা ডিফেন্ডার রবিন হ্যারানাচের হাঁটুতে লেগে জালে জড়ায়।

নির্ধারিত সময় শেষের খানিক আগে রোনালদোর হেড পোস্টে লেগে ফেরার পর দিয়েগো জটা জালে বল পাঠালে বাঁধভাঙা উদযাপন শুরু করে পর্তুগাল। যদিও মুহূর্ত পরই তা হতাশায় রূপ নেয়, সামান্য ব্যবধানে অফসাইডে ছিলেন রোনালদো।

এরপর ৯০তম মিনিটে ভিতিনিয়াকে তুলে কনসেইকাওকে নামান কোচ রবের্তো মার্তিনেস। আর মাঠে নামার ১১০ সেকেন্ডের মধ্যে, প্রথম ছোঁয়াতেই ব্যবধান গড়ে দেন ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড কনসেইকাও।

বাঁ দিক থেকে ছয় গজ বক্সে নিচু পাস বাড়ান পেদ্রো নেতো। বল ঠেকাতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন আত্মঘাতী গোল দেওয়া হ্যারানাচ; ফাঁকায় বল পেয়ে বাঁ পায়ের শটে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন সাবেক তারকা উইঙ্গার সের্জিও কনসেইকাওয়ের ছেলে ফ্রান্সিসকো কনসেইকাও।

প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে পর্তুগালের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নেমেই দলের নায়ক হয়ে উঠলেন কনসেইকাও। ২০০০ সালের ইউরোয় গ্রুপ পর্বে জার্মানির জালে হ্যাটট্রিক করে আজও দেশের ফুটবলে স্মরণীয় হয়ে আছেন বাবা সের্জিও কনসেইকাও।

  • ঊষারবাণী
  •