বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের সমন্বয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাতার অকাল মৃত্যুর পর, দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। প্রায় পাঁচ দশকের পথচলায় বিএনপি নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের পথে, দলটির সামনে আজকের মূল চ্যালেঞ্জ হলো জনগণের মন জয় করা।
একটি অস্থিতিশীল দেশের পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতার বার্তা নিয়ে জিয়াউর রহমান বিভিন্ন ক্ষেত্রের যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেন। তার ব্যক্তিগত সততা ও নিষ্ঠার কারণে, দলটি খুব অল্প সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এরপর রাজনৈতিক নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে দলটি অগ্রসর হয়। ৫ আগস্ট, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও, নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। দলীয় প্রধানের পক্ষ থেকে সহাবস্থানের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
৪৫ বছরের পথচলায়, বিএনপি কয়েকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। বছরের পর বছর বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে দলটি। বিশেষ করে ২০০৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বিএনপি কঠিন সময় পার করেছে। নেতা-কর্মীরা পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মামলা, হামলা এবং জেলজুলুমে তারা তটস্থ ছিলেন।
সংকটের সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে দল চালিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। হাজার মাইল দূরে থেকেও কর্মী-সমর্থকদের প্রেরণা দিয়েছেন তিনি।
তবে বিএনপির ওপর সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে দল গঠনের মাত্র ৩ বছরের মাথায়, যখন নির্মমভাবে হত্যা করা হয় প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে। শোক কাটিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই রাজনীতিতে আসেন খালেদা জিয়া এবং শক্ত হাতে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন, এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এখন দেখার বিষয়, নতুন প্রেক্ষাপটে বিএনপি জনগণের কতটা নিকটবর্তী হতে পারে।