টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরামের প্রতিটি গ্রাম এবং ছাগলনাইয়ার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। মহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পুরনো ১২টি ভাঙা স্থানসহ ২৭টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মুহূর্তে পানির পরিমাণ বাড়ছে। পানিবন্দি গ্রামগুলির মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা বা স্পিডবোট ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
চলতি মাসের ১৭ তারিখ থেকে অতিমাত্রায় বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে মুহুরী এবং কহুয়া নদীর পরশুরাম ও ফুলগাজীর বাঁধের ভাঙা স্থান দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দ্রুত পানি প্রবেশ করে মানুষের ঘরবাড়িতে। মঙ্গলবার রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করে ছাগলনাইয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার প্লাবন শুরু হয়।
ক্ষতিগ্রস্তদের মতে, চলতি বছরের জুলাই মাসে একবার এবং আগস্ট মাসে দুইবারসহ ফুলগাজী ও পরশুরামে তিনবার বন্যা হয়েছে। এর ফলে এলাকার মানুষ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কৃষি ও মৎস্যখাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং রাস্তা-ঘাট, বীজতলা ও সবজি বাগান ধ্বংস হয়েছে। দুই মাসের ব্যবধানে তিনবার বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় স্থানীয়রা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এবারের বন্যার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। মঙ্গলবার ভোরে বাড়ির ভিতরে পানি প্রবাহ শুরু হয়। অনেকেই সকালে উঠে দেখে তাদের ঘরের ভেতরে পানি রয়েছে। রান্নাঘরে পানি থাকায় চুলা জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না এবং অনেকেই শিশুদের নিয়ে খাটের উপরে ঘুমিয়ে কোনরকম জীবনযাপন করছেন। দুই উপজেলার প্রায় সকল গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা ও ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়া জানান, নদীগুলোর মোট ২৭টি স্থান দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি এবং শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।