ফেসবুক কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল আচরণ করলে এবং দেশের আইন অনুসরণ করলে তাদের প্ল্যাটফর্ম দেশে পুনরায় উন্মুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। বর্তমানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ফিরেছে, তবে ফেসবুক ও টিকটক ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এর পরেও প্রতিমন্ত্রী নিজে এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে সক্রিয় রয়েছেন। এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যাও তিনি প্রদান করেছেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষাপটে, ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে কারফিউ জারি করা হয়, যা বিভিন্ন সময়ে শিথিল করে এখনো বলবৎ রয়েছে। কারফিউ জারির আগেই ১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ফোর-জি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন ১৮ জুলাই রাত পৌনে নয়টা থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করা হয়, ফলে পুরো দেশ ইন্টারনেট সংযোগহীন হয়ে পড়ে।
পাঁচ দিন ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকার পর, ২৩ জুলাই রাতে কিছু নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়। পরদিন, ২৪ জুলাই, সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়; তবে ইন্টারনেট সেবা এখনো আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি। মোবাইল ইন্টারনেট এখনো বন্ধ রয়েছে। ব্রডব্যান্ড সংযোগ চালু হলেও, মেটা প্ল্যাটফর্মের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টিকটক বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী ২৩ জুলাই সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিষয়ে কতটুকু অনুমোদন দেওয়া যাবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”
২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হওয়ার পর, প্রতিমন্ত্রী নিজে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে নিয়মিত পোস্ট দেওয়া শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের আপডেট পোস্ট করে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন আয়োজনের সরাসরি সম্প্রচারও করছেন। ইনস্টাগ্রামে এবং ভেরিফায়েড টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকেও তিনি সক্রিয় রয়েছেন।
এই সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য ফেসবুক বন্ধ রাখা হলেও প্রতিমন্ত্রী নিজে তা ব্যবহার করছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে, জুনাইদ আহমেদ পলক শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গুজব প্রতিরোধ এবং সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক আরও জানান, তিনি এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকবেন। ফেসবুক ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম বন্ধ থাকলে মূলধারার গণমাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ঠেকানো সম্ভব হতো কি না, এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো কবে সাধারণ মানুষের জন্য চালু হবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি ফেসবুক ও টিকটকই বলতে পারবে। তারা বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন মেনে চলবে কি না এবং নিজেদের গাইডলাইন ঠিকমতো অনুসরণ করবে কি না, এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক ও টিকটক যদি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়, তবে সরকার তাদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।