জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরুদ্ধে ২৫টি ক্যাডারের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। পরিষদ জানিয়েছে, আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা কলমবিরতি, মানববন্ধন এবং সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
মতবিনিময় সভা ও কর্মসূচি পরিকল্পনা
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার সেগুনবাগিচার পূর্ত ভবনে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান। এতে ২৫টি ক্যাডারের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে পরিষদের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী:
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয় যে, যেসব বিভাগে এখনও বিভাগীয় সমাবেশ হয়নি, সেখানে দ্রুত সমাবেশ আয়োজন করা হবে এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো হবে।
কমিশনের সুপারিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
মতবিনিময় সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া সুপারিশের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। বিশেষত উপ-সচিব পুলে একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের জন্য ৫০% কোটা রাখার সুপারিশকে বৈষম্যমূলক এবং জনকল্যাণমূলক মেধাব্যবস্থা গঠনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়।
বক্তারা বলেন, “সিনিয়র সার্ভিস পুল বা উপ-সচিব পুল কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের সম্পত্তি নয়। সার্ভিস অ্যাক্ট, ১৯৭৫ অনুযায়ী এসব পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও কোটাভিত্তিক পদ্ধতি পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সার্ভিস অ্যাক্ট বাতিল করে ২০২৪-এর নির্বাচনের পর প্রশাসন ক্যাডার এসব পদ নিজেদের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটি প্রশাসনিক ন্যায়বিচার এবং জনকল্যাণের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট এবং তার প্রভাব
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন যে, প্রশাসন ক্যাডারের একক আধিপত্যের কারণে আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ প্রকৃত জনসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বক্তারা অভিযোগ করেন, এমন অবস্থা জনবান্ধব সরকারের পরিবর্তে জনবিচ্ছিন্ন শাসন ব্যবস্থার দিকে দেশকে ঠেলে দিচ্ছে।