শিরোনাম

৬০০ কোটি টাকার দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়েছে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ মাস আগে

গ্রানাইট খনিতে পাথর উত্তোলনের নামে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের প্রকাশ্য অনুসন্ধানে পাওয়া দুর্নীতির তথ্যের ভিত্তিতে চারটি মামলার সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। এতে পেট্রোবাংলা, বাপেক্স এবং গ্রানাইট খনির ১৩ জন শীর্ষ কর্মকর্তাকে আসামি করার সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে কমিশন সেই প্রতিবেদনকে আমলে না নিয়ে ‘কোয়ারি’ দিয়ে ফেরত পাঠায়। প্রথম অনুসন্ধান কর্মকর্তা জবাব দিয়েও মামলার সুপারিশে অনড় থাকেন, কিন্তু পরে তাকে সরিয়ে নতুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। নতুন কর্মকর্তা দীর্ঘ দুই বছরের অনুসন্ধান পাল্টে দিয়ে অভিযোগ পরিসমাপ্তির সুপারিশ করেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের প্রাথমিক প্রতিবেদনে মামলা সুপারিশ করা হলেও, পরবর্তী পর্যায়ে ১০ কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে মামলাগুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়। দুদক এর দায় এড়াতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে তদন্তের জন্য চিঠি পাঠায়। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এই ঘটনা দুদকের ভেতরে থাকা ‘দুর্নীতির ভূত’-এর পরিচায়ক, যা সংস্কার ছাড়া দূর করা সম্ভব নয়।

২০১৯ সালে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানির দুর্নীতির অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান। ২০২১ সালের জুন মাসে তিনি পেট্রোবাংলা, বাপেক্স এবং গ্রানাইট খনির ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করেন। তবে কমিশন মামলার সুপারিশ আমলে না নিয়ে ‘কোয়ারি’ দিয়ে ফাইল ফেরত পাঠায় এবং চুক্তি সম্পর্কিত বিস্তারিত তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট চাওয়া হয়।

জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)-এর মাধ্যমে মধ্যপাড়া গ্রানাইট খনির পরিচালনার চুক্তিতে থাকা শর্ত অনুযায়ী ৯২ লাখ টন পাথর উত্তোলনের কথা থাকলেও, মাত্র ৩০ লাখ টন উত্তোলন করা হয়। ফলে সরকারের ৬০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। অথচ কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম নতুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পেয়ে কয়েক মাসের মধ্যে এই দুর্নীতির অভিযোগ পরিসমাপ্তির সুপারিশ করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, যেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মামলার ফাইল ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও উঠে।

জানতে চাইলে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রানাইট খনির দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধানে কোনো সত্যতা না পাওয়ায় তিনি অভিযোগ পরিসমাপ্তির সুপারিশ করেন এবং ঘুষের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

  • usharbani
  • ঊষারবাণী
  •