ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি সতর্ক করে দেন, যারা এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকর্মী ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে টর্চার সেল ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য ‘আয়নাঘর’ যাতে কেউ ধ্বংস করতে না পারে, সে জন্য এটি সিলগালা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “এটি এক ভয়াবহ দৃশ্য। মানবিক মূল্যবোধ থেকে কতটা দূরে চলে গেলে মানুষ এত নৃশংস হতে পারে, তা কল্পনা করা কঠিন। এখানে ঘটে যাওয়া বর্বরতার মাত্রা অবিশ্বাস্য। এটা কি সত্যিই আমাদেরই দেশ?”
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “মানুষকে বিনা কারণে জঙ্গি আখ্যা দিয়ে ধরে এনে এসব টর্চার সেলে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হতো।”
তিনি জানান, “প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল শুধু এখানে এ ধরনের টর্চার সেল রয়েছে। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, সারা বাংলাদেশে আরও ২৭-২৮টি আয়নাঘর রয়েছে। প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করাও কঠিন, কতটা জানা আছে আর কতটা অজানা, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।”
তিনি গুম তদন্ত কমিশনকে এসব আয়নাঘর চিহ্নিত করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এর আগে সকালে মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকার তিনটি ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা। একসময় এসব স্থান নির্যাতন কক্ষ ও গোপন কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে, ১৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায় যে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়। সেখানে তারা গুমের তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করেন। সে সময় জানা যায়, আটক ব্যক্তিদের রাখা হতো ‘জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল’ বা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত নির্যাতনকেন্দ্রে।
তদন্ত কমিশনের সদস্যদের অনুরোধে এসব স্থাপনা সরেজমিনে দেখতে যান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান।