শিরোনাম

বিমানের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ ঘন্টা আগে
ছবি : সংগৃহীত

ইতালির রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। একটি অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফোন করে এই হুমকি দেওয়া হয়।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বিজি-৩৫৬ নম্বর ফ্লাইটটি রোম থেকে ঢাকার দিকে আসার সময় বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়। ফ্লাইটটি ২২ জানুয়ারি, বুধবার সকালে ৯টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জরুরি অবতরণ করেছে। এ সময় বিমানে থাকা ২৫০ জন যাত্রী ও ১৩ জন ক্রুকে প্লেন থেকে বের করে নিরাপদে বিমানবন্দরের টার্মিনালে আনা হয়।

তবে বিমানে কোনো বোমা রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হুমকির প্রেক্ষিতে প্লেনটিতে বোমা ডিসপোজাল ইউনিটসহ যৌথ বাহিনী পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্লেনটি বর্তমানে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের দ্বারা ঘিরে রাখা হয়েছে এবং তারা প্লেনের বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।

ফ্লাইটটি ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দর থেকে ঢাকা উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এমনকি, বিমানটি ঢাকার আকাশে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে হুমকির ফোন আসে, যা বিমান কর্তৃপক্ষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে।

পরে অবতরণের পর দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। এটি একটি গুরুতর নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় এবং দেশীয় কর্তৃপক্ষ তা দ্রুত সমাধানে মনোনিবেশ করে।

এই ঘটনা যে কোনো বিমানের জন্য একটি গুরুতর বিপদের সূচনা হতে পারে এবং এটি আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন খাতে নিরাপত্তা প্রশ্ন তুলেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলি নিশ্চিত করতে চাইছে যে, তাদের যাত্রী ও ক্রুদের সুরক্ষা নিশ্চিত থাকে, এমনকি তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আরও দৃঢ় করা হয়েছে।

এ ধরনের ঘটনা বিমান পরিবহন সেক্টরের জন্য একটি বড় পরীক্ষা। সাধারণত বোমা হামলার হুমকি পাওয়ার পর যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তা অনেকটাই সময়সাপেক্ষ। তবে, যাত্রীদের জীবন রক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, এই ধরনের ঘটনা গোটা দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর প্রভাব ফেলেছে এবং এটি দেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে হুমকির ফোনের ক্ষেত্রে যেসব নিরাপত্তা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তা বাস্তবসম্মত এবং কার্যকর হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে বর্তমানে বিভিন্ন দেশে নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ ও মানসম্মত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে কর্তৃপক্ষ তাদের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিতে শুরু করেছে যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত সমাধান করা যায়।

মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠেছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীও আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে এই ধরনের সঙ্কট মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে।

তবে, এ ধরনের হুমকি দেওয়া যে খুবই বিপজ্জনক হতে পারে, সেটি আরেকটি বড় সতর্কবার্তা। শুধু বিমান পরিবহনই নয়, পুরো জাতির নিরাপত্তার বিষয়টিও এখানে জড়িত।

অপরিচিত নম্বর থেকে আসা এই হুমকির ফোনটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং এর পেছনে কে বা কী উদ্দেশ্য ছিল, তা বের করার চেষ্টা চলছে। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের হুমকি দেওয়া ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বর্তমানে, যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও তৎপর এবং দৃঢ় করা হয়েছে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও এই ঘটনায় সম্পৃক্তদের শনাক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

বিমান বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ধরনের ঘটনার পর তারা ভবিষ্যতে আরও সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যেন যাত্রীদের কোনো ধরনের সমস্যা বা বিপদের মুখে পড়তে না হয়।