বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার পর তিনি তার পূর্বের কর্মজীবনে ফিরে যাবেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
স্বৈরাচার পতন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
বাংলাদেশের দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরাচার পতনের পর দেশটি অর্জন করেছে ইকোনমিস্ট কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার খেতাব। এ অর্জন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার নেয় সাময়িকীটি।
নির্বাচনের পর পরিকল্পনা
সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়, নির্বাচন আয়োজনের পর তার পরিকল্পনা কী। উত্তরে ড. ইউনূস বলেন,
“আমার পূর্বের চাকরি কার্যত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোরপূর্বক এ দায়িত্বে আনা হয়েছে। আমি প্যারিসে নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলাম এবং সেটি উপভোগ করছিলাম। আমি খুশি হব আমার সেই নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে, যা আমি সারা জীবন ধরে করে আসছি। তরুণরাও আমার সেই কাজকে ভালোবাসে। তাই আমি আমার সেই দলে বা আন্দোলনে ফিরে যাব, যা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।”
জঙ্গিবাদের ঝুঁকি নিয়ে মন্তব্য
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে ড. ইউনূস বলেন,
“আমি নিশ্চিত করতে চাই যে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না। আমাদের তরুণ প্রজন্ম ধর্মীয় বিষয়ে নিরপেক্ষ এবং তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণরাই পুরো বিশ্বকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন,
“এটি শুধু একটি দেশের পরিবর্তনের বিষয় নয়, বরং বাংলাদেশ যা করেছে তা বিশ্বকে দেখিয়েছে তরুণদের শক্তি কতটা বিশাল।”
তরুণদের প্রতি আহ্বান
ড. ইউনূস জানান, তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি বলেন,
“তরুণ-তরুণীরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের উচিত তাদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করা। তারা এখন সুযোগ পেয়েছে এবং তাদের সেই সক্ষমতাও রয়েছে।”
ক্যাবিনেটে তরুণদের ভূমিকা
অন্তর্বর্তী সরকারের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তিন তরুণ তার ক্যাবিনেটে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন,
“তারা দুর্দান্ত কাজ করছে এবং অত্যন্ত দক্ষ। এই তরুণরা গত শতাব্দীর নয়, বরং বর্তমান শতাব্দীর প্রজন্ম। তাদের দক্ষতা এবং সক্ষমতা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে।”