দেশে একজন ব্যক্তির শরীরে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আহমেদ নওশের আলম। তিনি জানান, ওই ব্যক্তির শরীরে এইচএমপিভি ছাড়াও একটি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে এইচএমপিভি ভাইরাস নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জানুয়ারির শুরুতে চীনে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে এটি জাপান, মালয়েশিয়া এবং ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে ইতোমধ্যে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এটি করোনার মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ নিয়ে এখনো কোনো সতর্কতা জারি করেনি।
এইচএমপিভি ভাইরাসের ইতিহাস:
২০০১ সালে প্রথমবারের মতো দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) আবিষ্কার হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এই ভাইরাস মানবজগতে প্রায় ৬০ বছর আগে থেকেই ছিল। এটি নতুন ধরনের কোনো ভাইরাস নয়। মূলত ১৪ বছরের নিচের শিশু এবং বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হন। সম্প্রতি চীনে এ ভাইরাসের কারণে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
বাংলাদেশের অবস্থান:
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, এইচএমপিভি নতুন কোনো ভাইরাস নয় এবং বাংলাদেশে এটি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কোভিড-১৯ ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং ভিন্নধর্মী একটি ভাইরাস, যার কারণে তার প্রভাব এত ব্যাপক হয়েছিল।
এইচএমপিভি ভাইরাসের লক্ষণ:
এ ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত জ্বর, নাক বন্ধ, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো ঠান্ডাজনিত উপসর্গ দিয়ে শুরু হয়। তবে সংক্রমণ তীব্র হলে ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা বা কানের ইনফেকশনের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শ্বাসতন্ত্রে ছড়ায় এমন অন্যান্য ভাইরাসের মতোই। ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গের মতো উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি এবং ঠান্ডা।
বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি ও সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণে বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন এবং ভবিষ্যতে মহামারি এড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।