শিরোনাম

‘ভয়ে’ অ‌ফিসে আসছেন না ইসলামী ব্যাংকের এমডি!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২ দিন আগে

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা কর্মকর্তাদের চাপের মুখে গত ১৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) অফিস ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর থেকে তিনি আর অফিসে ফিরেননি এবং বাসায় বসেই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল অনুমোদন করছেন বলে জানা গেছে।

অফিস ত্যাগের কারণ

ইসলামী ব্যাংকের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মনিরুল মওলার মনোমালিন্যের মূল কারণ ছিল এস আলম গ্রুপের এলসি খোলা এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ বিতরণ। অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে মনিরুল মওলা ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ অনুমোদন করেছিলেন।

কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, তার এ ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যাংকের আর্থিক অবস্থাকে দুর্বল করেছে। এর জেরে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা তাকে পদে বহাল রাখতে সম্মত নন।

পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা জানিয়েছেন, এমডি মনিরুল মওলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করেননি। ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এমডি বর্তমানে পর্ষদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন এবং সরাসরি অফিসে আসছেন না।

ঋণ জালিয়াতি ও মামলা

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এস আলম গ্রুপের মালিকের ছেলে আহসানুল আলম এবং মনিরুল মওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যাংক থেকে প্রায় ১,০৯২ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি করা হয়েছে।

ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা

ইসলামী ব্যাংক, যা একসময় বাংলাদেশের অন্যতম স্থিতিশীল ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ছিল, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আসার পর আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এস আলম গ্রুপের নামে বা বেনামে নেওয়া ঋণ বিতরণের ফলে ব্যাংকের আর্থিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মনিরুল মওলার ভূমিকা

মনিরুল মওলা এস আলম গ্রুপের চাপে অনৈতিকভাবে ঋণ অনুমোদনে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এসব অভিযোগই তার এমডি পদ ধরে রাখার ক্ষেত্রে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে।

কর্মকর্তাদের মতামত

ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৯ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর এমডি মনিরুল মওলা ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন এবং সরাসরি অফিসে আসতে সাহস পাচ্ছেন না।