মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী আরও প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সোমবার সংস্থাটির এই অনুরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সরকারের সংস্থা রেফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনের (আরআরআরসি) কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তিনি তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে জানান, ইউএনএইচসিআর থেকে পাঠানো চিঠিতে এই নতুন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বর্তমানে এইসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারের আশপাশে অস্থায়ী তাঁবু, স্কুল ও মসজিদে অবস্থান করছে।
আনাদোলুর তথ্যমতে, এই নতুন রোহিঙ্গাদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ৬০৭টি পরিবার, যার মধ্যে গত সপ্তাহে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে ১ হাজার ৪৪৮টি পরিবার নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, ইউএনএইচসিআর নতুন শরণার্থীদের ক্যাম্পে স্থান দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে, তবে সরকার এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। কারণ, ক্রমাগত নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রহণ করলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসা কর্তৃক সেনা ও পুলিশ স্থাপনায় হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযান শুরু করে। সেই সময় নাফ নদী পাড়ি দিয়ে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পরে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে গড়ে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির, যেখানে বর্তমানে ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
সম্প্রতি রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘাত বেড়ে গেছে। বর্তমানে সীতওয়ে ছাড়া পুরো রাজ্যই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই অবস্থায় সীমান্ত অতিক্রম করে আরও রোহিঙ্গা প্রবেশের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।