একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া পুনঃতদন্তের নির্দেশও বাতিল করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, মুফতি হান্নানসহ ১২ জন আসামির দেওয়া জবানবন্দি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এর আগে, গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ ১৯ মার্চ ওই খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান এবং দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন।
প্রথমে বিএনপি–জামায়াত জোট সরকারের সময় এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অভিযোগপত্র দেওয়া হয় এবং বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নতুন করে তদন্ত চালায়। টানা ৪১০ দিন টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মুফতি হান্নানের পুনঃস্বীকারোক্তি নেওয়া হয়। পরবর্তী সম্পূরক চার্জশিটে যুক্ত করা হয় তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ আরও কয়েকজনকে।
২০১৮ সালে বিচারিক আদালত রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তবে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সেই রায় বাতিল করে জানায়, সম্পূরক চার্জশিট ও পুরো বিচার প্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না।
অবশেষে, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো। মুক্তি পেলেন তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামি।