গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (১ জুন) দুপুরে বিচারক অভিযোগপত্রটি আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এ মামলার বিচার কার্যক্রম দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।
এই মামলার প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। অপর অভিযুক্তরা হলেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল। বর্তমানে চৌধুরী আবদুল্লাহ কারাগারে থাকলেও শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক বলে জানা গেছে।
প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগপত্রটি প্রায় আট হাজার পাঁচশ পৃষ্ঠার। এতে তার বিরুদ্ধে পাঁচটি ভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে ১২ মে তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে তাকে জুলাই মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দেয়, ২০ এপ্রিলের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
এছাড়া, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুইটি পৃথক মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিরস্ত্র শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর গোলাগুলির নির্দেশ ও পরিকল্পনার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই আন্দোলন দমন করতে গিয়ে প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়।