জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জনসাধারণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলেই ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, এগুলো মূলত বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের জমে থাকা সংকট সমাধানের একটি প্রয়াস। তবে শুধু সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন যথেষ্ট নয়; এর জন্য প্রয়োজন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামো গড়ে তোলা, গণতন্ত্রের চর্চা এবং গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ঐক্য বজায় রাখা।
তিনি আরও বলেন, জনতার ঐক্যই ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়নে বাধ্য করেছে। এ ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে এবং তার চেতনাকে সামনে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এটি কেবল একটি অঙ্গীকার নয়, বরং আমাদের দায়িত্বও বটে।
আলী রীয়াজ বলেন, যারা দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, লড়াই করেছেন—বিশেষ করে গত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতরা এবং এর আগে ১৬ বছর ধরে চলা নিপীড়নের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। গত ৫৩ বছরে যারা অংশগ্রহণমূলক, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের সংগ্রামের ধারাবাহিকতাও আমাদের রক্ষা করতে হবে।
সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে আলোচনা সামান্য হলেও অগ্রগতি এনে দিয়েছে। এই অগ্রগতি ধরে রাখতে না পারলে সব সুযোগ হারিয়ে যাবে। তাই সবাইকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এই অর্জন কেবল বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি নতুন গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করেন, সবাই একমত হলে দ্রুতই একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গণসংহতি আন্দোলন প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রামে যুক্ত রয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ে নেতৃত্ব ও সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছে।
মনির হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।