ইসরায়েলে ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে বেশ কয়েকটি শহর, যেখানে প্রচণ্ড গরম ও দমকা হাওয়ার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনের তীব্রতায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধান সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জরুরি বৈঠকে অংশ নেন, যা অনুষ্ঠিত হয় একটি অ্যাডহক কমান্ড সেন্টারে। সূত্র জানিয়েছে, প্রথম আগুন লাগে মধ্য ইসরায়েলের মোশাভ তারুম এলাকায়। এরপর বেইত শেমেশ শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রবল বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
প্রচণ্ড আগুনের কারণে এশতাওল, বেইত মেইর ও মেসিলাত জিওন শহর থেকেও মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহু চালক নিজেদের গাড়ি ফেলে শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
পুলিশ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলো থেকে দূরে থাকতে বলেছে। দাবানলের কারণে জেরুজালেমগামী একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিমান ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে কাজ করছে অগ্নিনির্বাপক বাহিনী। ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত অন্তত নয়জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাতজন দমকলকর্মী ও দুজন সাধারণ নাগরিক।
এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগুন লাগার স্থান থেকে জেরুজালেম প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে হলেও শহরের আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে এবং বায়ুমানের মারাত্মক অবনতি হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ছয়টি জেলার দমকল বাহিনী কাজ করছে, যাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। বেইত শেমেশের উত্তরে কাজ করছে প্রায় ১১০টি দমকল ইউনিট, ১১টি ফায়ার ফাইটিং বিমান এবং একটি হেলিকপ্টার। ইসরায়েলি বিমান বাহিনী, উদ্ধারকারী দল এবং পুলিশও সহযোগিতা করছে।
পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগুন উত্তর দিকে রুট ১ বরাবর ছড়িয়ে পড়ছে। পেতাহিয়া ও পেদায়া শহরের পাশে অবস্থিত রুট ৬–এর কিছু অংশও বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মকর্তারা আগুনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে আটকে পড়া পর্বতারোহীদের উদ্ধারে কাজ চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রেহোভোটের কাছে মহাসড়কে হেঁটে চলা লোকজন ও চারপাশে ঘন ধোঁয়ার ঘনঘটা।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলে দীর্ঘ ও শুষ্ক গ্রীষ্মকালের কারণে অতীতেও একাধিকবার দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। এবারও সেই একই কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।