পাঁচ বছর আগের প্রতিশোধ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে পরাজিত করে শিরোপা জিতেছিল ভারত। ২০২১ সালের আসরেও ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। তবে, গত আসরে সেই হারকে প্রতিশোধ হিসেবে ভারতকে সেমি থেকে বিদায় করে এবং এবার পাঁচ বছর আগের ফাইনালে হারানোর পর পূর্ণ প্রতিশোধ নিলো তরুণ টাইগাররা।
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের গত আসরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, আর এবারও সেই সাফল্য ধরে রেখেছে যুব টাইগাররা। ফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে একেবারেই পাত্তা না দিয়ে জয় লাভ করেছে লাল-সবুজের দল।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ভারতকে ৫৯ রানে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ।
ফাইনালে জয় পাওয়া সহজ ছিল না বাংলাদেশের জন্য। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। ইনিংস বিরতির পর ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের সামনে এই লক্ষ্য ছোট মনে হচ্ছিল, কিন্তু বাংলাদেশি পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সেই লক্ষ্যই ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়নদের ৩৫.১ ওভারে ১৩৯ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ শিরোপা নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশের দেয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত প্রথম উইকেট হারায় মাত্র ৪ রানে। আয়ুশ মাত্রে ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এর পর ভারত তৃতীয় উইকেট হারায় ৪৪ রানে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ওপেনার বৈভব সুরিয়াবংশীকে ফেরান মারুফ মৃধা।
চতুর্থ উইকেটে ২৯ রানের জুটি গড়েন কার্তিকেয়া এবং মোহাম্মদ আরমান। ৪৩ বল খেলে ২১ রান করা কার্তিকেয়াকে ফেরান ইকবাল হোসেন ইমন। এরপর ভারতের ব্যাটিং ধ্বসে পড়ে। একই ওভারে নিখিল কুমার এবং পরবর্তী ওভারে হারভানশ পাঙ্গালিয়াকে ফেরান ইমন। ৮ রানের ব্যবধানে ৩টি উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে বড় ধস নামান তিনি।
ভারতের দলীয় সংগ্রহ ৯২ হলে আল ফাহাদ কিরান করমালেকে ক্যাচে পরিণত করে সপ্তম উইকেট তুলে নেন। এক প্রান্তে ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আরমান প্রতিরোধ গড়ছিলেন, তবে হার্দিক রাজের সঙ্গে ২৩ রানের জুটি গড়ে তিনি কিছুটা স্থিতিশীলতা আনেন। কিন্তু অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম এসে অফ স্পিনে আরমানকে আউট করে জয় নিশ্চিত করে দেন। পরবর্তীতে হার্দিক রাজকেও তিনি আউট করেন এবং ভারতের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন।
বাংলাদেশের হয়ে আজিজুল হাকিম তামিম এবং ইকবাল হোসেন ইমন ৩টি করে উইকেট নেন। আল ফাহাদ দুটি উইকেট নেন, এবং মারুফ মৃধা ও রিজান হোসেন একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। প্রথম দিকে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়লেও, মোহাম্মদ শিহাব জেমস এবং রিজান হোসেন দলের হাল ধরেন। তবে, কিছু দ্রুত উইকেট পতনের পর রিজান ৪৭ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। সামিউন বশির রাতুল ৭ বলে ৪ রান করে রানআউট হন এবং আল ফাহাদও ১ রান করে ফিরে যান।
শেষ ওভারে যুধাজিৎ প্রথম বলেই ইকবাল হোসেন ইমনকে আউট করেন এবং ৫ বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায়। ভারতের হয়ে যুবাজিৎ, চেতন শার্মা এবং হার্দিক রাজ দুটি করে উইকেট নেন।