শিরোনাম

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা তুলে নিল জান্তা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর মিয়ানমারে তুলে নেওয়া হয়েছে জরুরি অবস্থা। দেশটিতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামরিক সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জান্তা সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) একটি লিখিত আদেশের মাধ্যমে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়, যা পরে সরকারি মুখপাত্র জৌ মিন তুন এক অডিও বার্তায় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গঠনের উদ্দেশ্যে সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে লক্ষ্যেই আজ থেকে দেশে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

গত ৮ মার্চ এক অনুষ্ঠানে জেনারেল মিন অং হ্লেইং জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সামরিক সরকারের মুখপাত্র জৌ মিন তুনের সর্বশেষ বক্তব্যেও বলা হয়, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও নির্দিষ্ট তারিখ এখনও জানানো হয়নি।

মিয়ানমারে সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেই নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী। এর পর ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে তারা, এবং সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে।

ওই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি ও তার দল এনএলডি। সুচি, তার দলের সংসদ সদস্য, মন্ত্রীসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক করে সামরিক সরকার। এখনো অনেকে কারাবন্দি। পরবর্তীতে এনএলডির দলীয় নিবন্ধনও বাতিল করা হয়, ফলে তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না।

এদিকে, জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং নিজে নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিনি সরাসরি প্রার্থী না হলেও এমন এক অবস্থানে থাকবেন, যেখান থেকে নির্বাচন-পরবর্তী সময়েও আসল ক্ষমতা তার হাতেই থাকবে।

রাজধানী নেইপিদোতে এক সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে জেনারেল হ্লেইং বলেন, “আমরা প্রথম ধাপ সম্পন্ন করেছি। এখন দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই নতুন ধাপে প্রবেশের পথ হচ্ছে নির্বাচন, যা ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে।”

এই ঘোষণা মিয়ানমারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যদিও অনেকেই আশঙ্কা করছেন— নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা নয়, বরং সামরিক শাসনের একটি বৈধ রূপ তৈরি করতেই এই উদ্যোগ।