গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩২ ফিলিস্তিনি

ছবি : সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের টানা হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ৩২ জন ফিলিস্তিনি। এতে আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি। সর্বশেষ এই হতাহতের ঘটনায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ২৬০ জন ছাড়িয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৩ এপ্রিল) এ তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

প্রতিদিনই গাজায় বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সাম্প্রতিক হামলায় তারা গাজার আল-ডোরা শিশু হাসপাতালেও আক্রমণ চালিয়েছে। মঙ্গলবারের হামলায় গাজার বিভিন্ন এলাকায় আরও অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন।

এক পৃথক প্রতিবেদনে তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানায়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের টানা হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২৬৬ জনে।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় আহত হয়েছেন ৬০ জনের বেশি, যাদের গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯১ জনে। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারেননি।

প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা সংঘর্ষের পর গত ১৯ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। এরপর প্রায় দুই মাস গাজায় তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ সময় কাটলেও, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও হামলা শুরু করে ইসরায়েল। মূলত হামাসের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মতবিরোধ থেকেই ফের আগ্রাসন শুরু হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৯০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৯৫০ জন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের চলমান হামলায় গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একইসঙ্গে অঞ্চলটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে।

এছাড়া, ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

বর্তমানে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গাজায় গণহত্যার অভিযোগে একটি মামলার মুখোমুখি রয়েছে।